কিছু বিতর্কিত আবিস্কার [ সিরিজ ]

Posted by Unknown on Saturday, June 27, 2015 with No comments
কিছু বিতর্কিত প্রত্নতাত্বিক আবিস্কার (Part-1)
বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানিদের মধ্যে বির্ত খুবই সাধারন ব্যাপার। এমন কোন আবিস্কার নাই যেটা নিয়ে প্রথমে বিতর্ক হয় নি। প্রত্নতাত্বিক জগতেও এই বিষয়টার কমতি নেই। বরঞ্চ প্রত্নতাত্বিক জগতে এগুলো আরো দুই ধাপ বেশি। এখনে যে কোন কিছ আবিস্কৃত হলেই আগে সেটা নিয়ে কিছু বিতর্ক হয় তার পরে যথেস্ট তথ্যপ্রমানের ব্যাবস্থা হবার পরেই সেগুলো ইতিহাস এর পাতায় স্থান পায়। এরকমই কিছু প্রত্নতাত্বিক বিতর্কিত আবিস্কার নিয়ে আলোচনা করবো যা নিয়ে দির্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে বিজ্ঞানিদের মধ্যে।
২৫) Nefertiti Bust
প্রচীন মিশরের রানি নেফারতিতিকে চেনেনা এমন মানুষ খুব কমই আছে। ইনি ছিলেন ফারাও সম্রাট Akhenaten এর স্ত্রি। সম্রাট এর মৃত্যুর পরে তিনি মিশরের ক্ষমতায় বসেন। নেফারতিতিকে মানুষ সবচেয়ে বেশি চেনে তার অসাধারন সৌন্দর্যের কারনে। তিনি তৎকালিন বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরি মহিলা ছিলেন বলেই সবাই এক বাক্যে মেনে নেয়। কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে প্রচুর বিতর্ক আছে ইতিহাসবিদ এবং আর্কিওলজিস্টদের মধ্যে্ আর সেটি হচ্ছে তার একটি মুর্তি।
এই মুর্তিটি আবিস্কৃত হয় ১৯১২ সালে একদল জার্মান আর্কিওলজিস্টদের দ্বারা Thutmose নামক এক প্রাচীন ভাস্করের ঘরের মধ্যে। ধারনা করা হয় এই ভাস্কর্যটি Thutmose 1350 খ্রিস্টপুর্বে নির্মান করেন। কিন্তু মার্কিন বিজ্ঞানিরা কিছুতেই বিষয়টা মানে চান না। কারন তাদের ধারনা জার্মানরা নিজেদেরকে বিখ্যাত করার জন্য এটিকে নিজেদের হাতে রিমডেলিং করে এই অবস্থায় আনে। যদি পরবির্তিতে বিষয়টি কিছুটা সুরাহা হয় কিন্তু আজও বিতর্কটি থেকেই গেছে।
২৪) Spanish Hill
এটি আমেরিকার পেনিসেলভিনিয়া রাজ্যে অবস্থিত একটি রহস্যময় প্রচীন প্রত্নতাত্বিক স্থাপনা। মুলত এটি একটি ২৫০ ফিট উচু পাহার যাতে রয়েছে জীবন যাপনের সবধরনের উপকরন। পাহারটি খোরার পরে বিজ্ঞানিরা অবাক হয়ে যান এই দেখে যে এই পুরো পাহাড়টি সরাসরি মানুষ নির্মিত। মানে কাছেই যে নদীটি রয়েছে সেটির তলাতে পাওয়া নুরি এবং কংকর দ্বারা পুরো পাহাড়টি নির্মান করা হয়েছে। তাছারা পাহারের চারিপাশে দারুন একটা পরিখা খনন করা হয়েছে। কিন্তু বিতর্কের স্থানটি হচ্ছে কারা এটি নির্মান করেছে আর তাদের ভাগ্যে কি হয়েছিল। বিশেস করে মার্কিন প্রত্নতত্ববিদরা বলেন এটি সুপ্রাচিন কালে এখানকার একদল বসতি স্থাপনকারিরা নির্মান করেছিল বসাবাসের জন্য।
কিন্তু অন্যান্য প্রত্নতত্ববিদরা বলেন এটি রেড ইন্ডিয়ানদের একটি প্রসাসনিক কেন্দ্রস্থান ছিল যেখানে একটি প্রাসাদ সহ পুরো একটি ছোট খাট শহর ছিল। পরিখাটি প্রমান করে তারা এগুলো নির্মান করেছিল শহরকে আক্রমনের হত থেকে ডিফেন্স করার জন্য। ধারনা করা হয় আমেরিকানরা যে কয়েক কোটি রেডইন্ডিয়ান হত্যা করেছিল তার একটা দালিলিক প্রমান ছিল এই পাহড়টি। তাই তারা এই পুরো পাহাড়টি ধংস্ব করে দেয় আরো ৩ শত বছর আগে। যদিও এখনো এখানকার মাটির তলা রেডইন্ডিয়ানদের ব্যাবহৃত জিনিষপত্র পাওয়া যায়।
২৩) Tikal Temple 33
এটি একটি মায়ান টেম্পল বা মন্দির। মায়ানরা এই মন্দিরটি নির্মান করে ৪৫৭ খ্রিস্টাব্দে মানে আজ থেকে আরো ১৬০০ বছর আগে। এটি বর্তমানে গুয়েতামালা নামক দেশে অবস্থিত। মায়ান এই মন্দিরটি মুলত নির্মান করা হয় একটি অন্তস্টক্রিয়ার স্থান হিসাবে। যেখানে মৃতদের নিয়ে আসা হত। প্রায়ই এখানে জিবিত মানুষ মেরে তাদের বলি দিতো মায়ানরা তাদের দেবতাদের তুস্ট করার জন্য।
প্রন্ততত্ববিদদের মধ্যে বিতর্ক কিন্তু এটার উৎপত্তি বা এটা উদ্দেশ্য নিয়েও না। তাদের বিতর্কের স্থানটা হচ্ছে এই মন্দিরটা ধংস্ব করা নিয়ে। মুলত গল্পটা হচ্ছে এই মন্দিরের নিচেই অবস্থিত ছিল তৎকারিন মায়ান রাজা Siyaj Chan K'awiil II এর সমাধি। মুলত এই সমাধিটাই মন্দিরটার ভিত্তি হিসাবে কাজ করেছে। আমেরিকান আর্কিওলজিস্টরা মুল মন্দিরটা ভেঙে ফেলেন এই সমাধিটাতে ঢোকার জন্য। এবং এখানেই বাধে বিপত্তি। পুরো পৃথিবীর সকল বিজ্ঞ আর্কিওলজিস্টরা এর জোর প্রতিবাদ করেন কারন যারা ভেঙেছিল তারা আর নতুন করে সেই মন্দিরটিকে আগের স্থানে ফিরাতে পারেনি। কিন্তু আমেরিকনরা কখনো কি কারো কথা শুনেছিল??
এটি সম্পুর্ন একটি নতুন সিরিজ শুরু হচ্ছে। তাই সাথে থাকবেন আশা করছি এবং অনেক মজার মজার কিছু জানবে আমরা আশা করছি।































মূল লেখা ঃ প্রকৌশলী বশর সিদ্দিকী